সোমবার ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ - ১৮:১৩
ইরানের সুন্নি আলেম: শত্রুর ফিতনা ও বিভেদের মোকাবিলা প্রতিটি মুসলমানের দায়িত্ব

ইরানের সানান্দাজ শহরের আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের জুমার ইমাম মামোস্তা মোহাম্মদ আমিন রাস্তি বলেছেন, ইসলামি সমাজে ফিতনা ও বিভেদ সৃষ্টির ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করা শুধু আলেম ও ধর্মীয় নেতাদের দায়িত্ব নয়; বরং প্রতিটি মুসলমানের ওপরই এ দায়িত্ব বর্তায়। তিনি সতর্ক করে বলেন, “আমাদের অসতর্ক বা অযথা কথা-বার্তা যেন কখনো শত্রুর হাতে বিভেদ সৃষ্টির অস্ত্র হয়ে না ওঠে।”

মিলাদুন্নবী (সা.) ও ঐক্য সপ্তাহ উপলক্ষে হাওজা নিউজ এজেন্সি’র সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, “যদি আমরা শত্রুপক্ষের মিডিয়া ও তাদের বিশ্লেষণের দিকে খেয়াল করি, তবে দেখব তাদের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হলো ইসলামি বিশ্বের ঐক্য ভাঙা ও ফিতনা ছড়ানো।”

মামোস্তা রাস্তি আরও বলেন, “মহান নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ির ভাষায়, জাতীয় ঐক্য আজ দেশের সবচেয়ে বড় সম্পদ। তাই বিশেষ করে আলেম ও ধর্মীয় নেতৃবৃন্দকে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পরিস্থিতি গভীরভাবে বুঝে বুদ্ধিমত্তা ও বাসিরাত (দূরদৃষ্টি) দিয়ে শত্রুর ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে হবে। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে, যাতে ইসলামি বিশ্বে কোনো ফিতনা বাস্তবায়িত না হতে পারে।”

তিনি জোর দিয়ে বলেন, ফিতনা ও বিভেদ প্রতিহত করা শুধু আলেমদের নয়, বরং প্রতিটি মুসলমানের দায়িত্ব। “আমরা যেন অসতর্ক কথাবার্তার মাধ্যমে শত্রুকে সুযোগ করে না দিই,” তিনি মন্তব্য করেন।

শত্রুর দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার প্রসঙ্গে মামোস্তা রাস্তি বলেন, “শত্রুরা সবসময় ইসলামি দেশগুলোর মধ্যে স্থায়ী বিভাজন সৃষ্টি করতে চায়, যাতে প্রতিরোধ আন্দোলন দুর্বল হয়ে পড়ে। এজন্য আমাদের প্রতিটি অবস্থান ও আচরণে বাসিরাত ও প্রজ্ঞা অপরিহার্য। বিশেষ করে জায়োনিস্ট শাসনের ষড়যন্ত্র আমাদের ঐক্য ও সচেতনতার মাধ্যমেই ব্যর্থ করতে হবে।”

আরবাইন হোসেইনির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এ বছরও শত্রুর ভ্রান্ত প্রচারণা সত্ত্বেও আমরা লক্ষ করেছি, ইমাম হোসাইন (আ.)-এর আরবাইন মিছিলে মিলিয়ন মুসলমান অংশগ্রহণ করেছে। এতে প্রমাণিত হলো, মুসলমানরা—শিয়া ও সুন্নি নির্বিশেষে—ধর্ম, রাসূল (সা.) ও আহলে বাইতের প্রতি গভীর ভালোবাসা পোষণ করে।”

সানান্দাজের ইফতা ও রুহানিয়াত পরিষদের সদস্য মামোস্তা রাস্তি আরও বলেন, “ইসলামি মাযহাবগুলোর মধ্যে ভিন্নমত অবশ্যই রয়েছে। তবে এ ভিন্নমত কোনোভাবেই ভ্রাতৃত্ব ভাঙার কারণ নয়। বরং এসব ভিন্নমত ইসলামকে আরও শক্তিশালী করে। তাই মতভেদকে হুমকি নয়, বরং ইসলামি উত্থানের সুযোগ হিসেবে দেখতে হবে।”

শেষে তিনি বলেন, “সর্বোচ্চ নেতা সর্বদা ইসলামি ঐক্যের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। তাঁর গভীর কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গি স্পষ্ট করে দেয় যে, মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে বড় হুমকি হচ্ছে বিভেদ, আর সবচেয়ে বড় শক্তি হচ্ছে ঐক্য। এজন্যই তিনি মাযহাবগুলোর মধ্যে নৈকট্যের ওপর জোর দিয়েছেন। আমরাও মুসলমান হিসেবে ও তাঁর নেতৃত্বের অনুসারী হিসেবে অবশ্যই তাঁর দিকনির্দেশনা মেনে চলব, যাতে শত্রু কখনো মুসলিম উম্মাহর ঐক্য ও  সারিবদ্ধতা ভাঙতে না পারে।”

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha